শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
উজিরপুর প্রতিনিধি ;
বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ হালদার ওরফে নান্টুকে (৪৫) প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রসীরা। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে। হত্যার প্রতিবাদে শনিবার হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ নারী পুরুষ দিনভর কারফা বাজারের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল, ৫টি দোকান ঘর ও ডিবির গাড়ী ভাংচুর, ৩ তলা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্দরা।
এসময় সাংবাদিক, পুলিশ, স্থানীয়সহ আহত হয়েছে অর্ধ শতাধিক। পুলিশ, র্যাব, ডিবি, পিবিআই,ফায়ার সার্ভিস মিলে দীর্ঘ ১০ ঘন্টা পরে কিছুটা পরিস্থিতিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ ইউসুফ হোসেন ও এসআই মিজানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। নিহত বিশ্বজিৎ উপজেলা বিলগাব বাড়ী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শুকলাল হালদারের ছেলে, তার স্ত্রী বেবী হালদার ও একমাত্র কন্যা স্বর্না(১১) রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়ন কারফা বাজারে নিজের দোকান স্বর্ণা গার্মেন্টস অ্যান্ড ক্লোথ স্টোরে বসে ছিলেন চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার ওরফে নান্টু। হঠাৎ করে মোটরসাইকেল যোগে এসে কয়েকজনলোক দোকানে ঢুকে তাকে কাছ থেকে গুলি করে তার মৃত্যু নিচ্ছিত করে পালিয়ে যায়। এসম চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার এর কাছে থাকা তাঁর সহযোগী কারফা গ্রামের নিহার হালদারকেও সন্ত্রীরা গুলিচালালে সে গুলিবৃদ্ধ হন। স্থানীয় লোকজন ও স্বজনেরা চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎকে ও নিহারকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকেরা ইউপি চেয়ারম্যানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। মেডিকেল কলেজ রাত পৌনে ১০টার দিকে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা.ইফাদ আহমেদ চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। নিহতর শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছে। এদিকে আগৈলঝাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আহত নিহার হালদারকে পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অপরদিকে এ ঘটনায় জল্লা ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য তাইজুর রহমান পান্না, আইয়ুব হোসেন ও হরষিত রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়াও বিক্ষুব্ধ জনতা খোকোন সরদারের তিন তলা দালানে আগুন দেয়। ফায়ারসার্ভি ঘটাস্থলে যেতে চেষ্টা করে জনতার বেরিগেট ভেঙ্গেযেতে পারে নাই। এছাও হরষিত রায় ও সোহাগ সরদারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ ৪টি দোকান ভাংচুর করে।
এব্যাপারে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল সন্ত্রাসীরা চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎকে গুলিকরে হত্যা করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হত্যাকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কি কারনে হত্যা হয়েছে বা কারা করেছে তা এখন পর্যন্ত বলা যাবে না। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার ওরফে নান্টুকে গুলি করে হত্যা সাংবাদ শুনে স্বজনদের সমবেদনা জানাতে ছুটেজান, বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাবেক চিপ হুইফ আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ- এমপি। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা সকল খুনিদের গ্রেফতার পূর্বক ফাঁসির দাবী জানান আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ- এমপি’র কাছে । এ সময় আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেন, খুনীরা যত শক্তিশালী হউক না কেন, কেউ পার পাবে না। তাদের এই মাটিতেই বিচার করা হবে।
এব্যাপারে ঘটনা স্থালে বরিশাল পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, খুনীরা যত শক্তিশালী হোক তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। দায়িত্বে অবহেলার কারণে জল্লা পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ ইউসুফ হোসেন ও এসআই মিজানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
নিহত, বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু উপজেলার বিলগাব বাড়ী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শুকলাল হালদারের ছেলে, তার স্ত্রী বেবী হালদার ও একমাত্র কন্যা স্বর্না(১১) রয়েছে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা দায়ের হয়নি।
Leave a Reply